Friday, March 30, 2012

গ্রিক নার্সিসাস থেকে নার্সিসিজম

গ্রিক পুরাণের বহুল আলোচিত অনেক চরিত্রের মধ্যে অন্যতম নাম নার্সিসাস। তিনি বিখ্যাত ছিলেন তাঁর সৌন্দর্যের জন্য। কিন্তু ওই সৌন্দর্য তাঁর জীবনহানিরও কারণ হয়েছিল। পানিতে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে তিনি এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে নিজের চোখ অন্যদিকে ফেরানোর সামর্থ্যও হারিয়ে ফেলেছিলেন এবং এই অবস্থাতেই মারা যান তিনি। এই নার্সিসাস থেকেই নার্সিসিজমের ধারণা এসেছে, যা মানুষের মধ্যে এক ধরনের আত্মবাদ, আত্মগর্ব, আত্মশ্লাঘার বৈশিষ্ট্য ইঙ্গিত করে। নার্সিসিজম বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। কখনো সামাজিক বা সাংস্কৃতিক সমস্যা হিসেবে, কখনো বা মানসিক অসুস্থতা হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। সংগৃহীত

Thursday, March 29, 2012

গল্প- সৎ , জ্ঞানী আর রাজনীতিবিদ

স্বাধীনতার পরের কথা। এক দেশপ্রেমিক ভালো মানুষের স্বপ্নে দেখা দিলেন এক দরবেশ। দরবেশ তাঁকে বললেন, ‘যুদ্ধ করে নতুন দেশ পেয়েছ। বলো, দেশের জন্য তুমি কী চাও? যা চাইবে তা পাবে।’ ভালো মানুষ তো ভালোই মানুষ। এক পলক ভেবে তিনি বললেন, ‘হে দয়াল দরবেশ, আমি চাই যে আমার দেশের সব মানুষ সৎ হবে, জ্ঞানী হবে আর রাজনীতি করবে।’ কথা শুনে দরবেশের কপালে চিন্তার রেখা ফুটল। কিছুক্ষণ চুপ থেকে তিনি বললেন, ‘বড় কঠিন দাবি রে! যাক, আমি বর দিলাম, তোর দেশের মানুষের মধ্যে ওই তিনটি গুণই থাকবে, তবে কেউই একসঙ্গে দুটির বেশি গুণ পাবে না।’ তখন থেকে দেশে সৎ ও জ্ঞানী মানুষের অভাব নেই, অভাব নেই রাজনীতির লোকেরও। কিন্তু মুশকিল হলো, রাজনীতির সৎ মানুষটি জ্ঞানী হন না, সৎ ও জ্ঞানী যিনি তিনি রাজনীতিতে ব্যর্থ হন। আর যিনি রাজনীতিতে সফল তিনি জ্ঞানী হলে সৎ হন না আর সৎ হলে জ্ঞানী থাকেন না। সংগৃহীত: রাজনীতিবিদেরা যা পারেন না প্রথম আলোতে ফারুক ওয়াসিফ এর কলাম

Tuesday, March 20, 2012

ডার্টি পিকচার ও আমাদের গণতন্ত্র-মো. জাকির হোসেন

প্রথম আলো ধেকে সংগৃহীত: বলিউডের আলোড়ন সৃষ্টিকারী হিন্দি ছবি ডার্টি পিকচার। দুই প্রজন্মের দুই তারকা অভিনেতা-অভিনেত্রী নাসিরুদ্দিন শাহ ও বিদ্যা বালান ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ছবিটি আমার দেখা হয়নি। আকাশ টিভির সৌজন্যে ছবিটির কিছু দৃশ্য এবং দুটো গানের ভিডিওচিত্র দেখেছি। তাতেই বোঝা হয়ে গেছে, কেন ছবিটির নাম ডার্টি পিকচার। নানা কারণে ছবিটি আলোচিত-সমালোচিত। ডার্টি পিকচার-এর একটি গান ‘ও লা লা, ও লা লা’ এখন বেশ হিট। মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের সম্পর্ক নিয়ে ক্লাসে আলোচনার সময় আমি ছাত্রছাত্রীদের জিজ্ঞাসা করি, ডার্টি পিকচার নিয়ে আলোচনায় তোমরা যে সময় ব্যয় করো, ততটুকু সময় কি বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে ব্যয় করো? উত্তর আসে, না। আমার প্রশ্ন, কেন? ছাত্রছাত্রীরা সমস্বরে জবার দেয়, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ডার্টি পিকচার-এর চেয়েও ডার্টিয়ার। উত্তর শুনে নড়েচড়ে উঠি। উৎসাহ বোধ করি ব্যাখ্যা শোনার জন্য। তাদের জবাব, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ক্ষমতার পালাবদলের (জ্বলন্ত উনুন থেকে ফুটন্ত কড়াইয়ে) অর্থাৎ যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার ফাঁদে আটকা পড়েছে। এখানে দলীয় আদর্শ, নীতিনৈতিকতা, জনগণের চাওয়া মুখ্য বিষয় নয়। আর তাই ১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম হলেও সেই থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনকে সূক্ষ্ম, স্থূল কিংবা ডিজিটাল কারচুপি আখ্যা দিয়ে বিরোধী দল বছরের পর বছর সংসদে অনুপস্থিত থেকেছে। জাতীয় সংসদে অংশগ্রহণ না করলেও জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় সব ভাতা গ্রহণ করেছে। বিনা শুল্কে গাড়ি আমদানি করেছে। বিদেশ ভ্রমণ করেছে। এটি কি শ্লীল গণতন্ত্রচর্চা হতে পারে? আর বিরোধী দল যখন উপস্থিত হয়েছে তখন সরকারি ও বিরোধী দলের অনেক সংসদ সদস্যের মধ্যে যে অশ্রাব্য বাক্যবিনিময় হয়েছে, তাকে কি ডার্টিয়ার ডেমোক্রেসি বলা অন্যায় হবে? দীর্ঘদিন পর রোববার বিরোধী দল সংসদে ফিরে এসেছে। বিরোধী দলের একজন সংসদ সদস্য সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব দিতে গিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন, তা শুনে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দ্বিমত করার অবকাশ নেই। সম্মানিত(!) সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘তিনি মইন উ আহমেদের কোল ছাড়া আর কোথায় কোথায় বসেছেন, তা তদন্ত করে দেখতে হবে।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্পর্কে বলেছেন, ‘টেলিভিশনে তাঁর বিশ্রী হাসি দেখে ভয়ে মানুষ টেলিভিশন বন্ধ করে দেয়।’ আইন প্রতিমন্ত্রী সম্পর্কে বলতে গিয়ে সাংসদ বলেছেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তাঁর কাপড়চোপড় খুলে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।’ ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশিদের নির্যাতন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দুইজন মন্ত্রীর লুঙ্গি তুলে ভারতের মহিলা পুলিশ দিয়ে পেটানো হবে।’ বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ যখন সুন্দর কাপড় পরা পরিপাটি গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখে, তখন সাংসদ রেহেনা আক্তার রানু মন্ত্রীদের কাপড় খোলার হুমকি দিয়ে কি আমাদের গণতন্ত্রের কাপড় খুলে ফেলেননি? ডার্টি পিকচার-এর ‘ও লা লা, ও লা লা’ গানটি যেমন পরিবারের সব সদস্য নিয়ে দেখার মতো নয়, একজন মহিলা সাংসদের গণতন্ত্রের কাপড় খোলা বক্তব্যও কি পরিবারের সব সদস্য নিয়ে শোনার মতো! গণতন্ত্র বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন তৈরির কারখানা হলো পার্লামেন্ট। অক্সিজেন তৈরির কারখানাকে অকার্যকর রেখে কি গণতন্ত্রচর্চা সম্ভব? ছাত্রছাত্রীদের কথা শুনে আমার একটা গল্প মনে পড়ে যায়। এক আমেরিকানের চায়নিজ বন্ধু অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। আমেরিকান বন্ধু চায়নিজ বন্ধুকে হাসপাতালে দেখতে যায়। হাসপাতালে শয্যার পাশে আমেরিকান বন্ধু দাঁড়ানোর পর চায়নিজ বন্ধু ‘নি চাদোয়ান লা উয়াদা ইয়াংজি গুয়ান’ বলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আমেরিকান বন্ধু চায়নিজ ভাষা জানত না। মৃত্যুর আগে বন্ধু তাকে কী বলেছে, তা জানার জন্য আমেরিকান বন্ধু আরেকজন চায়নিজের শরণাপন্ন হলে চায়নিজ ব্যক্তিটি তাকে জানান, এর অর্থ হলো, ‘যে অক্সিজেন পাইপ দিয়ে আমার শ্বাস-প্রশ্বাস সচল রাখা হয়েছে, তুমি তার ওপর দাঁড়িয়ে আছ, আমি মরে যাচ্ছি। গণতন্ত্রের পরম বন্ধু আমাদের রাজনীতিবিদেরাও কি জনগণের ভাষা বুঝতে অক্ষম হয়ে গণতন্ত্রের অক্সিজেন পাইপের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন? ছাত্রছাত্রীদের নির্মোহ বিশ্লেষণ আমাকে আরও আগ্রহী করে তোলে। আমি আরও শুনতে চাই। তারা বলে, বাংলাদেশের গণতন্ত্র হাতেগোনা কয়েকজন ব্যক্তির সমার্থক হয়ে উঠেছে। ব্যক্তি যখন গণতন্ত্রের সমান হয়ে ওঠে, তখন আর তা গণতন্ত্র থাকে না। শাসনব্যবস্থা তখন শ্লীলতার সীমা ছাড়িয়ে যায় এবং তার কাছে আইনের শাসন পরাজিত হয়। মানবাধিকার অপসৃত হয়। জনগণের স্বপ্নের পশ্চাদপসরণ ঘটে। ন্যায়বিচার নিজেই অবিচারের শিকার হয়ে পড়ে। ডার্টিয়ার ডেমোক্রেসি সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের বিশ্লেষণ শেষ হয় না। তাদের ক্ষোভমিশ্রিত বিশ্লেষণ চলতে থাকে। এক ছাত্র দাঁড়িয়ে বলে, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকেরা ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ পলিসির মাধ্যমে আমাদের যেভাবে বিভক্ত করেছিল, আমাদের ডেমোক্রেসি তার চেয়ে বহুগুণে এবং বহুমাত্রিকে বিভক্ত করে ফেলেছে। পিয়ন থেকে শুরু করে অফিসের বড় কর্তা আজ ভয়াবহ রাজনৈতিক বিভক্তির শিকার। সরকারি চাকরিজীবী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, আমলা, শিক্ষকের নামের আগে আজকাল আওয়ামীপন্থী, বিএনপিপন্থী, জামায়াতপন্থী কিংবা বামপন্থী যোগ করে পরিচিত করা হয়। নেতা-নেত্রীদের লাগামহীন অশোভন ও আক্রমণাত্মক বক্তৃতা-বিবৃতি নাগরিকদের ক্রমাগতভাবে হিংসা, বিদ্বেষ ও সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এরূপ হিংসা-বিদ্বেষ আর প্রতিশোধের গণতন্ত্র ডার্টিয়ার নয় কি? নাগরিকদের বিভক্তির কথা মনে পড়লেই একটি ঘটনা আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। আমি যে ভবনে থাকি, সেই ভবনের নিচতলায় একদিন অত্যন্ত অল্প বয়সের দুটো শিশু, যাদের বয়স বড়জোর পাঁচ বছর হবে, তাদের কথোপকথন শুনে থমকে দাঁড়াই। এদের একজন আরেকজনকে বলছিল, আমি তোমার সঙ্গে খেলব না। কারণ, তোমরা অমুক দল করো। শিশুটি আমাদের দুটো বড় দলের একটির নাম উচ্চারণ করে তার সমবয়সীর সঙ্গে খেলতে অস্বীকার করে। ক্লাস শেষে বাসায় ফেরার পথে আমার কেবলই মনে হতে থাকে, তরুণ প্রজন্মের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া আমাদের ডার্টিয়ার ডেমোক্রেসি কি তাহলে ডার্টিয়েস্ট কিছু নিয়ে অপেক্ষা করছে? কৃতজ্ঞতা: প্রথম আলো সম্পাদকীয়-২০ মার্চ ২০১২ মো. জাকির হোসেন আইন অনুষদের ডিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। zhossain@justice.com

Tuesday, January 24, 2012

মাহমুদ আহমেদিনেজাদের জীবনযাত্রা




মাহমুদ আহমেদিনেজাদ। ইরানের প্রেসিডেন্ট। আধুনিক বিশ্বের সবচাইতে ক্ষমতাশীল প্রেসিড...েন্টদের একজন। তার বাবা একজন সামান্য কামার। সৎ,সাহসী,পরিশ্রমী,দূরদর্শী নেতা হিসেবে সারা বিশ্বেই আহমেদিনেজাদ আজ সমাদৃত। পেশায় তিনি ছিলেন একজন পি এইচ ডি ধারী তুখোড় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। তেহরান ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির অধ্যাপক, ছিলেন তেহরানের মেয়র। ১৯৭৯ সালে ইরানের যে হাজার হাজার ছাত্র আমেরিকান দূতাবাস আক্রমণ করে ৫৩ জন কূটনীতিক কে বন্দী করে আহমেদিনেজাদ ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। তার জীবনযাপন ও চলাফেরার মধ্যে আমরা খুঁজে পাই আল্লাহ ও তার রাসুলের নির্দেশিত পথের স্পষ্ট ছাপ। একটি উন্নত রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান হয়েও তিনি যে সৎ জীবন যাপন করেন সেটা থেকে আমাদের নেতাকর্মীরা অনেক কিছু শিখতে পারে। তার সেই বিচিত্র জীবনের কিছু চিত্র নিচে তুলে ধরার চেষ্টা করব.........।।

(১) জ্ঞান,বিজ্ঞান,শিক্ষা,প্রযুক্তি,শিল্প-সংস্কৃতি,গবেষণা,অর্থনীতি সব দিক থেকে ইরান আজ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর তালিকায় নিজের স্থান করে নিয়েছে। দেশের উন্নয়নে তার দূরদর্শী চিন্তাভাবনা ইরানকে আজ অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে।

(২) অথচ আপনি ভাবলে অবাক হবেন ,এই ক্ষমতাশালী লোকটি একসময় তেহরানের মেয়র থাকাকালে নিজ হাতে রাস্তায় ঝাড়ু দিতেন।

(৩)আপনি ভাবলে অবাক হবেন, এই লোকটি আজো দুই রুমের একটা ছোট্ট বাড়িতে থাকেন।তার বাসায় দুই একটা কাঠের চেয়ার ছাড়া আরা কোন আসবাবপত্র নেই।

(৪) আপনি ভাবলে অবাক হবেন, এই লোকটি আজো ঘরের ফ্লোরে একটা পুরনো কার্পেটের উপর বালিশ বিছিয়ে তারপর ঘুমান। তার বাসায় কোন শোয়ার খাট নেই।

(৫)আপনি ভাবলে অবাক হবেন, এই লোকটি প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় তার ছেলে মাহাদির বিয়েতে মাত্র ৪৫ জন অতিথিকে(২৫ জন নারী এবং ২০ জন পুরুষ)নিমন্ত্রন করেন। তাকে যখন NBC নিউজ চ্যানেলের সাংবাদিক এর কারন জিজ্ঞাসা করেন তখন তিনি অত্যন্ত হাসিমুখে বিনয়ের সাথে বলেন, এর চাইতে বেশি মানুষকে দাওয়াত দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই। ভাবুন, পৃথিবীর একটা উন্নত দেশের প্রেসিডেন্ট বলছে এই কথা। তাও সেই বিয়েতে কোন ভোজের ব্যাবস্থা ছিলনা। প্রত্যেক অতিথি কে একটি কমলা,একটি কলা,একটি আপেল আর ছোট্ট এক টুকরো কেক দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়েছিল।

(৬) আপনি ভাবলে অবাক হবেন, এই লোকটি সবার আগে সকাল ৭ টায় অফিসে যান।

(৭) আপনি ভাবলে অবাক হবেন, এই লোকটি আজো সকালে বেরিয়ে যাওয়ার সময় নিজের স্ত্রীর হাতের বানানো সকালের ব্রেকফাস্ট এবং দুপুরের খাবার একটা ছোট্ট কালো ব্যাগে করে সাথে নিয়ে যান। অফিসের কার্পেটের ফ্লোরে বসে তৃপ্তির সাথে সবার সামনে তিনি তার খাবার খান।

(৮) দিনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় তিনি বাসার দারোয়ান, পথচারী ও সাধারন মানুষের সাথে কথা বলে তাদের সুখ দুঃখ শেয়ার করেন।

(৯)তিনি যখনি কোন মন্ত্রীকে তার অফিসে ডাকেন তাকে একটা মন্ত্রণালয় চালানোর একটা দিকনির্দেশনা দিয়ে দেন। পাশাপাশি তিনি তাদের বলে দেন,রাস্ট্রের পক্ষ থেকে তাদের ব্যাক্তিগত হিসাব নিকাশ ও তাদের নিকট আত্নীয় স্বজনের কার্যকলাপ কঠিনভাবে মনিটর করা হচ্ছে।

(১০)ভাবতে অবাক লাগে তার ব্যাক্তিগত সম্পত্তি বলতে তেহরানের বস্তিতে অবস্থিত ছোট্ট একটি বাড়ি,যা ৪০ বছর আগে তিনি তার বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। বাড়িটির নাম Peugeot 504. আপনি শুনলে অবাক হবেন তার ব্যাংক একাউন্টে বেতনের জমানো কিছু টাকা ছাড়া আর কিছু নেই। তেহরান ইউনিভার্সিটি তে তার বেতন মাত্র ২৫০ ইউ এস ডলার।

(11) আপনি শুনলে অবাক হবেন, তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য রাষ্ট্র থেকে কোন টাকা নেন না। তিনি ইউনিভার্সিটি থেকে প্রাপ্ত বেতনের টাকা দিয়ে চলেন।BBC সাংবাদিক তাকে এই নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “সব সম্পত্তি হল রাষ্ট্রের আর তার কাজ হল সেগুলো পাহারা দেওয়া”।

(১২)আপনি শুনলে অবাক হবেন, এই লোকটি এত বেশি পরিশ্রম করেন যে,তিনি সারাদিন ৩ ঘণ্টার বেশি ঘুমানোর সময় পান না। তিনি প্রতিদিন সকাল ৫ টায় ফযরের নামায পড়ে কাজ শুরু করেন আর রাত ২ টায় ব্যাক্তিগত স্টাডি ও এশার নামায পড়ে ঘুমাতে যান।

(১৩)আপনি শুনলে অবাক হবেন, এই লোকটি কখনও নামায বাদ দেন না। নামাযের সময় হলে রাস্তায় ছোট্ট কাপড় বিছিয়ে নামায আদায় করেন। রাষ্ট্রীয় সব বড় বড় নামাযের জামাতে তিনি সব সময় পিছনের সারিতে সাধারন মানুষের সাথে বসতে ভালবাসেন।


সংগৃহীত